আজ শনিবার, ২৮শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রুরেল হত্যা মামলায় ময়না তদন্তের রিপোর্টের সাথে মামলার এজাহারের কোন মিল নেই,নির্দোষ আলমাছ

ময়না তদন্তের রিপোর্টের সাথে মামলার

ময়না তদন্তের রিপোর্টের সাথে মামলার

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
রূপগঞ্জে আইপিএল ক্রিকেট নিয়ে জুয়া খেলার জের ধরে মারামারিতে ছুরিকাঘাতে নিহত রুবেল হত্যা মামলায় জামিন পেয়েছেন মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের আ.লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ আলমাছ।

১০ জুলাই বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আনিসুর রহমানের আদালত রুবেল হত্যা মামলার শুনানি শেষে ৮ আগস্ট পর্যন্ত তোফায়েল আহমেদ আলমাছকে জামিন দেয়।

আলমাছের জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আসামী পক্ষের আইনজীবী এড.স্বপন ভূইয়া।

আসামীদের পক্ষে আদালতে শুনানী করেন,বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান এড.ইউসুফ হুমায়ুন,আ.লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নারায়ণগঞ্জ বার কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি এড.আনিসুর রহমান দিপু,নারায়ণগঞ্জ মহানগর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এড.খোকন সাহা, আড়াইহাজার আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ ভূইয়া ও সমিতির সাবেক সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট হাবিব আল মুজাহিদ পলু, এড.স্বপন ভূইয়া, অ্যাডভোকেট মামুন সিরাজুল মজিদ সহ শতাধিক অইনজীবী।

আসামী পক্ষের আইনজীবী স্বপন ভূইয়া জানান, আইপিএল খেলায় জুয়ার টাকাকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে রুবেল নিহত হয়। নিহত রুবেলের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও মামলার এজাহারের সাথে কোন মিল নেই। রাজনৈতিক হয়রানী করার জন্য মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমাছকে জড়ানো হয়েছে। এটি একটি মিথ্যা এবং বানোয়াট মামলা। মহামান্য আদালত আলমাছ চেয়ারম্যানকে জামিন দিয়ে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করেছে।

গত ১০ জুন আলমাছ আদালতে আত্মাসমর্পন করলে শুনানির সময় অসুস্থ্য হয়ে পড়লে আসামিকে আইনজীবীর জিম্মায় গত ২৭ জুন পর্যন্ত জামিন দেন আদালত।

গত ২৭ শে মে ভারতের আইপিএল ক্রিকেট খেলার ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। আইপিলের ফাইনাল ম্যাচে জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে রুবেল নামে এক যুবক নিহত হয়।

অনুসন্ধানে দেখা যায় আলমাছের ফোনের কললিস্ট বলছে, ঘটনার দিন ইফতার পার্টি ও নামাজ শেষে তিনি ঢাকায় তারাবির নামাযের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। কললিস্ট অনুযায়ী রাত সাতটা পয়তাল্লিশ মিনিট পর্যন্ত আলমাছ ছিলেন রূপগঞ্জের কাঞ্চনে। যা ঘটনাস্থল মুড়াপাড়া থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে। আলমাছের ইফতার পার্টির অংশ নেয়ার সংবাদ বেশ কিছু গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ হয়। কললিস্ট,টিভি ফুটেজ ও পত্রিকাতে প্রকাশিত ছবিতে বিষয়টি স্পষ্ট রয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে রুবেলের মৃত্যু হয়েছে মাথায় ও পেটে ছুড়িকাঘাতে। এজাহারে আরও উল্লেখ হয়েছে,মামলার এক নম্বর আসামী তোফায়েল আহমেদ আলমাছের হাতে থাকা পিস্তলের বাট দিয়ে নিহতের রুবেলের মাথায় আঘাত করলে মাথা ফেটে গুরুত্বও জখম হয় রুবেল। কিন্তু রুবেলের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট বলছে,রুবেলের মাথায় কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। পেটে ছুড়িকাঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে।

১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে মামলার অন্যতম আসামী সুরুজ মিয়া বলেছেন আইপিএলে জুয়ায় জেতা দশ হাজার টাকা চাইতে গিয়ে মোমেন ও রুবেলের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে মোমেন তার বাড়িতে থাকা লোহার পাইপ দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে তখন নয়নের হাতে থাকা চাকু দিয়ে ছরিকাঘাত করে রুবেলকে । জবানবন্দীতে সুরুজ আরও বলেন,নিহত রুবেল ও তার ভাই মামলার বাদী মোমেনের ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে রূপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান ভূইয়ার সাথে।

সরেজমিনে দেখা গেছে আলমাছ ভূমিদস্যু মাদক জুয়ার বিরুদ্ধে রূখে দাড়িয়েছে। তিনি অর্জন করেছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। আলমাছের জনপ্রিয়তা মুগ্ধ হয়ে গত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আ.লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে মুড়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক তুলে দেন।তিনি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিএনপি জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীকে পরাজিত করেন।

চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আলমাছ মুড়াপাড়ায় ব্যাপক উন্নয়নমূল কাজ করছে। আলমাছের জনপ্রিয়তার কাছে হার মেনে হাইব্রিড আ.লীগের একটি অংশ ভূমিদস্যুদের নির্দেশে রুবেল হত্যা মামলায় আলমাছকে জড়িয়েছে।

এ দিকে বাদী পক্ষে জামিনের বিরোধিতা করে শুনানিতে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল, সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া, ক্রীড়া সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল বাশার রুবেল, অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দীন, অ্যাডভোকেট সাজ্জাদুল হক সুমনসহ বেশকজন আইনজীবী।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ